October 30, 2024, 4:14 pm
নিজস্ব প্রতিবেদক: উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর ৫৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে উদীচী বগুড়ার উদ্যোগে নানা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
বিকাল সাড়ে ৪ টা বগুড়ার প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় জাতীয় সংগীত ও দলীয় সংগীতের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন শেষে একটি র্যালী শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
র্যালী শেষে ঐতিহাসিক সাতমাথা মুক্তমঞ্চে উদীচী বগুড়ার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুস সোবহান মিন্নুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহীদুর রহমান বিপ্লবের সঞ্চালনায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় আলোচনা করেন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি বগুড়া জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ফরিদ, উদীচী বগুড়ার সহ সভাপতি এ্যাড. লুৎফর রহমান, সদস্য ফিরোজ হামিদ খান রেজভী, সারিয়াকান্দি উপজেলার সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ জামান, ছাত্র ইউনিয়ন বগুড়ার সভাপতি ছাব্বির আহম্মেদ রাজ প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, “নিপীড়িত মানুষের গান গাইবার অঙ্গীকার নিয়ে, মানুষের মুক্তির জন্য, ন্যায় ও অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সোচ্চার হওয়ার লক্ষ্যে ১৯৬৮ সালের ২৯ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। ‘উদীচী’ শব্দের অর্থ উত্তর দিক। প্রতিষ্ঠাতা সাহিত্যিক, সাংবাদিক সত্যেন সেনের স্বপ্ন ছিল, সব সময় উত্তরের আকাশে থাকা ধ্রুবতারার মতোই অবিচল থেকে জাতিকে পথ দেখিয়ে যাবে এই সংগঠন। দেশ ও সমাজের নানা উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে অর্ধশতকের বেশি সময় ধরে সেই চেষ্টা চালিয়ে গেছে উদীচী। উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, মহান মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন এবং সর্বশেষ ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমিকা ছিল উদীচীর। জাতীয় জীবনে অবদানের জন্য সংগঠন হিসেবে পেয়েছে একুশে পদক। “
বক্তারা আরো বলেন, “উদীচীর শিল্পী-কর্মীরা মানবমুক্তির লড়াইয়ে দৃঢ় পায়ে এগিয়ে যাবে। গভীর অন্ধকার থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংস্কৃতির শক্তিতে এক নতুন জাতীয় উজ্জীবন ঘটাবে।”
আলোচনা সভা থেকে বক্তারা ছাত্র-জনতার অভ্যূত্থানে সংঘটিত হত্যাকান্ডের বিচার, দেশির বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক হামলা, সংখ্যালঘু নির্যাতন, ডাকাতি, হত্যাকাণ্ড এবং ঐতিহ্যবাহী ভাস্কর্য-শিল্প-শিল্পাঙ্গণ, মাজার-মন্দির ধ্বংসের সাথে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা, ৭ মার্চ, ১৫ আগস্ট এবং ৪ নভেম্বর দিবসগুলো বাতিলের সিদ্ধান্ত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সরে আসা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার দাবি জানান বক্তারা। এছাড়া উদীচী বগুড়া জেলা কার্যালয়সহ সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান বক্তারা।
আলোচনা সভা শেষে গণসঙ্গীত, লালন সংগীত, আবৃত্তি এবং “ভূত-ভবিষ্যৎ” শ্রুতিনাটক পরিবেশন করেন উদীচী বগুড়ার শিল্পীবৃন্দ।