October 23, 2024, 4:33 am
নিজস্ব প্রতিবেদক: তিন বছর পরে সিরাজগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় আসামী গ্রেফতার করলো পিবিআই।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ থানাধীন ১নং তালম ইউপির চেয়ারম্যান মোঃ আব্বাছ উজ জামান এর বাড়ীতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির রহস্য উদঘাটন সহ ঘটনার সাথে জড়িত ০২ আসামীকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই সিরাজগঞ্জ জেলা। গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো-১। মোঃ রমজান আলী @ আলম (৪৪) এবং ২। আসামী মোঃ আব্দুর রাজ্জাক (৪৮)। উভয়ই বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
গত ২৯/০৯/২০২১ খ্রিঃ তারিখ রাত অনুমান ০১.১৫ ঘটিকায় সিরাজগঞ্জের তাড়াশ থানাধীন ১নং তালম ইউপির চেয়ারম্যান মোঃ আব্বাছ উজ জামান (৬১), পিতা-মৃত শওকত হোসেন, সাং-তারাটিয়া, থানা-তাড়াশ, জেলা-সিরাজগঞ্জ এর বাড়ীতে অজ্ঞাতনামা ডাকাতদল প্রবেশ করে। তাদের মধ্যে ০৬ জন ডাকাত পিস্তল ও ছোরা ধরে প্রথমে চেয়ারম্যান মোঃ আব্বাছ উজ জামান এর দুই হাত ছাই কালারের ওড়না দিয়ে পিছন দিকে বেধে রেখে হুমকি দেয় যে, কথা বললে গুলি করে শেষ করে দেবে। তিনি জীবন রক্ষার্থে নিরব থাকলে উক্ত ০৬ জন সহ আরো ১০/১১ জন অজ্ঞাতনামা ডাকাতরা ঘরের ভিতরে থাকা আলমারী, ট্রাংক এবং ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার ভেঙ্গে সর্বমোট ৪৩ ভরি ০৬ আনা স্বর্ণ এবং নগদ ২,৪০,০০০/-(দুই লক্ষ চল্লিশ হাজার) টাকা নিয়ে যায়। এ সংক্রান্তে ইউপির চেয়ারম্যান মোঃ আব্বাছ উজ জামান বাদী হয়ে তাড়াশ থানার মামলা নং-১৪, তারিখ-২৯/০৯/২০২১, ধারাঃ ৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড দায়ের করেন। জেলা গোয়েন্দা শাখা, সিরাজগঞ্জ মামলাটি তদন্ত পূর্বক ০৬ জন আসামীর বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করলেও জড়িত আসামীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় নাই। বিজ্ঞ আদালত বাদীর নারাজীর প্রেক্ষিতে গত মে/২০২৪ এ মামলাটি অধিকতর তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ সুপার, পিবিআই, সিরাজগঞ্জকে নির্দেশ প্রদান করেন। পিবিআই, সিরাজগঞ্জের পুলিশ পরিদর্শক(নিঃ) মোঃ সোহেল রানা মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন।
মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ সোহেল রানা মামলার ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে তদন্তে প্রাপ্ত পলাতক আসামী মোঃ রমজান আলী ওরফে আলম (৪৪), পিতা-আবু সাইদ কশাই ওরফে আব্দুল মজিদ, সাং-দৌলতপুর, থানা-বেলকুচি, জেলা-সিরাজগঞ্জ কে গ্রেফতার করে। গত ০৫ এপ্রিল ২০২৪ খ্রিঃ তারিখে আসামী মোঃ রমজান আলী ওরফে আলম কে বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপন করলে সে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে। সে তার জবানবন্দিতে উল্লেখ করে যে “আসামী রাজ্জাক এই ডাকাতির ঘটনার মূল। রাজ্জাকের সাথে অজ্ঞাতনামা আরো ০৪ (চার) জন ছিল।
আসামী রমজান আলীর প্রদত্ত জবানবন্দির প্রেক্ষিতে, মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ সোহেল রানা ঘটনার সাথে জড়িত আসামী মোঃ আব্দুর রাজ্জাক (৪৮), পিতা-মোঃ দানেশ, সাং-গাবর গাড়ী, থানা-তাড়াশ, জেলা-সিরাজগঞ্জকে সনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রাখে। পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, আসামী আব্দুর রাজ্জাক ইতোমধ্যেই অপর একটি ডাকাতি মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলহাজতে আটক রয়েছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামী আব্দুর রাজ্জাক কে বর্ণিত মামলায় শোন এরেস্ট দেখিয়ে ০১ (এক) দিনের পুলিশ রিমান্ডে আনেন। গত ০৩ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে তাকে বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপন করা হলে সে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বি এর ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে এবং ঘটনার সাথে জড়িত অজ্ঞাতনামা আরো কয়েক জন আসামীর নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে।
উল্লেখ্য যে, তার বিরুদ্ধে ০৩ (তিন) টি ডাকাতি, ০১ (এক) টি হত্যা, ০১ (এক) টি অপহরণ এবং ০১ (এক)টি অস্ত্র মামলা বিচারাধীন আছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারসহ মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।