September 20, 2024, 12:49 am
শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ সামাজিক অনুশাসন কিংবা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভয়, অথবা আদালতের শাস্তির ভয় কোন কিছুরই তোয়াক্কা করছেনা তারা। অনেকটা ফিল্মি স্টাইলে জীবন যাত্রাযাপনে অভ্যস্ত তারা।
বলছি, বগুড়ার শাজাহানপুরে বেপরোয়া হয়ে উঠা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের কথা। আধিপত্ত্য বিস্তার, মারপিট, ছিনতাই, লুটপাট, মাদক, জমি দখল, বালি-মাটি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের স্বর্গরাজ্যে পরিনত করেছে এই কিশোর গ্যাং সদস্যরা।
পুরা উপজেলা জুড়ে হত্যা, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, মারপিট, ইভটিজিং সহ সকল প্রকার অপরাধমূলক কর্মকাডের মুল হোতা এরা।
এই সমস্ত কিশোর গ্যাংয়ের সিন্ডিকেটের কারণে কেহই স্বাচ্ছন্দে বাড়ি-ঘর সহ কোন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করতে পারেন না। নীচু থেকে উচু স্তরের কোন মানুষই আতংকে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পায় না।
এরই ধারাবাহিকতায় গত রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার বি-ব্লক ক্যান্টনমেন্টের সামনে রহিমাবাদ উত্তরপাড়া এলাকায় মহাসড়কের পাশে আব্দুর রাজ্জাক নামে এক ব্যক্তির মুদি দোকানে কৌশলে হামলা চালিয়ে জিম্মী করে দোকানের নগদ টাকা সহ দেড় লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায় স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। বাধা দিতে গেলে দোকান মালিকের দুই ভাই আব্দুল মালেক (৩২) ও আব্দুল বাছেদকে (২৬) ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। আহটতরা বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে আশংকাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধিন রয়েছেন। এঘটনায় সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে আব্দুর রাজ্জাক বাদি হয়ে রহিমাবাদ উত্তরপাড়া গ্রামের শামিম আহমেদ (২৮), হিমেল (২৬), মারুফ (২২), রাশেদ (৩২) এবং বুলবুল (৩৫) সহ অজ্ঞাতনামা একদল কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক জানান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার জন্য তিনি নিয়মিত দোকানেই রাত্রিযাপন করেন। রোববার রাতে তার ষাট বছর বয়সি বৃদ্ধ বাবা দোকানে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত ২টার দিকে শামিম এসে পরিচয় দিয়ে সিগারেট চায়। এতো রাতে সিগারেট দিতে অস্বীকার করায় দোকানের সার্টারের জোরে ধাক্কাতে থাকে। বাধ্য হয়ে সার্টার খোলা মাত্রই শামিমসহ একদল ছেলে দোকানে ঢুকে তার বাবাকে জিম্মী করে দোকানে থাকা নগদ টাকাসহ দেড় লক্ষাধিক টাকার মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে তিনি সহ তার ভাইয়েরা শামিমের বাড়িতে গিয়ে মালামাল ফেরৎ চাইলে তারা অতর্কিত ভাবে হামলা চালায়। হামলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার ছোট দুই ভাইয়ের মাথাসহ শরিরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আহত হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, এই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে। তারা নিজেরা মাদক সেবন এবং ব্যবসা করে। নারী দিয়ে জিম্মী করে অর্থ হাতিয়ে নেয়। তাদেরকে চাঁদা না দিয়ে কেউ বসতবাড়ি নির্মাণ করতে পারে না। এলাকার ছোট বড় কেউ তাদের ভয়ে কথা বলতে সাহস পায় না। একটি রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় এরা ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। এমতাবস্থায় প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় অসহায় মানুষেরা।
থানার ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। অপরাধীদের সনাক্ত করে দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে।