September 19, 2024, 9:32 pm

নোটিশ:
সংবাদদাতা আবশ্যক
সংবাদ শিরোনাম:
উপজেলা ছাত্রদলের বিরুদ্ধে দুধকুমার নদীর তীর রক্ষা বাঁধের কাজে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ। নিউ হোপ এ্যানিমেল নিউট্রিশন কোম্পানীর পক্ষ হতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারীদের জন্য গো- খাদ্য প্রেরণ। বগুড়ার শাজাহানপুরে জমি নিয়ে বিরোধে দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৫। ঘোড়াঘাটে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী-সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত। কাহালুর মাঝপাড়া জাগ্রত মানবসেবা সংস্থার উদ্যোগে বৃক্ষ রোপন কর্মসূচীর উদ্বোধন। তালোড়ার ডাঃ শফিউল করিমের প্রাণ নাশের চেষ্টা থানায় জিডি। কাহালুর এরুইল বাজার ইসলামী ব্যাংক এজিন্ট শাখার গ্রাহক সমাবেশ ও মতবিনিময় সভা। বগুড়ার কাহালুতে নকল সোনা মূর্তি সহ ২ জন গ্রেফতার। কাহালুর ইউএনও’র স্বেচ্ছাচারিতায় বিতর্কিত কর্মকান্ডের স্বচ্ছতা নিয়ে সচেতন মহলে নানা প্রশ্ন বগুড়ায় হক্বের দাওয়াত সিদ্দীক্বিয়া দরবার ও সুন্নতী জামে মসজিদের উদ্যোগে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপিত।

রোহিঙ্গাদের স্ট্যাটাস নির্ণয় না হওয়া পর্যন্ত লিগ্যাল এইড সুবিধা পাবেনা : বিচারপতি নাঈমা হায়দার

কক্সবাজার প্রতিনিধি:
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসে কক্সবাজারের বিভিন্ন শরনার্থী ক্যাম্পে অবস্থান করা রোহিঙ্গারা সে দেশের নাগরিক। তাদেরকে বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক মহল “Forcibly Displaced Myanmar Nationals” অর্থাৎ “জোরপূবর্ক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক” হিসাবে অভিহিত করে থাকে। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর রোহিঙ্গাদের জন্ম নেওয়া শিশুদের কি অবস্থা হবে, তাও এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। রোহিঙ্গাদের অপরাধের জন্য বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে বিচার হলেও বাংলাদেশে তাদের স্ট্যাটাসটা কি হবে, তা এখনো ক্লিয়ার না হওয়ায় তারা সরকারের লিগ্যাল এইড সুবিধার আওতায় আসবেনা। সরকারের বিনামূল্যে লিগ্যাল এইড সুবিধা শুধুমাত্র বাংলাদেশের নাগরিকেরা পাবে। বিচারপতি নাঈমা হায়দার আরো বলেন, দেশের সর্বস্থরের নাগরিকদের বিচার পাওয়ার বিষয়টি সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু অর্থাভাবে, অযাচিত ঝামেলায় জড়ানোর ভয়ে, আরো বিভিন্ন কারণে অনেকে সহজে আদালতের দারস্থ হতে চাইতো না। এটা দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আসছে। অসচ্ছল, নির্যাতিতা নারী, নিঃস্ব, গরীব, অসহায়, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সহ দেশের সর্বস্থরের নাগরিকদের লিগ্যাল এইড আইন বিচার পাওয়ার এই সাংবিধানিক অধিকারকে নিশ্চিত করেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত উপজেলা ও ইউনিয়ন লিগ্যাল এইড কমিটির কার্যক্রমকে আরো শক্তিশালী, গতিশীল ও গণমূখী করণের উপর গুরুত্বারোপ করে বিচারপতি নাইমা হায়দার বলেন, বিরোধকে একেবারে অংকুরেই শেষ করে দিতে হবে। সেটা মিডিয়েশন হউক আর আরবিট্রেশনের মাধ্যমে হউক। এক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান গুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বিচারপতি নাইমা হায়দার বলেন, সরকার বিনা খরচে অসহায় গরীব মানুষদের যে আইনি সহায়তা দিয়ে আসছে তা বিশ্বে বিরল। বিশ্বের অনেক দেশ এখনো এই সেবা দিতে পারেনি। তাই শহর থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে লিগ্যাল এইডের এই সেবা পৌঁছে দিতে সংশ্লিষ্ট সকলেকে একযোগে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, লিগ্যাল সার্ভিস ২০২২ সাল পর্যন্ত ৭ লক্ষ ৩৬ হাজার মানুষকে লিগ্যাল এইড সেবা দিয়েছে। যা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, অনুষ্ঠানের সভাপতি কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল। কক্সবাজার জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ সাজ্জাতুন নেছা লিপি’র সঞ্চালনায় ইউএসএইড’র প্রমোটিং পিস এন্ড জাস্টিস (পিপিজে) অ্যাকটিভিটি’র সহায়তায় অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি’র বক্তব্য রাখেন, জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালক ও জেলা জজ মোহাম্মদ আল মামুন।মতবিনিময় সভার প্রারম্ভে বক্তব্য রাখেন, USAID’s Promoting Peace and Justice Activity এর Chief Of Party হিদার গোল্ডস্মিত। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজারের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুন, সুপ্রীম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসার (অতিরিক্ত জেলা জজ) ফারাহ মামুন, কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মো: শাকিল আহমেদ, কক্সবাজার সদরের ইউএনও মোহাম্মদ জাকারিয়া, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মহিউদ্দিন মুহাম্মদ আলমগীর, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম, টেকনাফের হোয়াইক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী প্রমুখ। এসময় উপস্থিত ছিলেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৪ মোঃ মোশাররফ হোসাইন, জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা’র উপ পরিচালক (অর্থ ও হিসাব, যুগ্ম জেলা জজ) মোঃ হাবিবুর রহমান চৌধুরী, কক্সবাজারের যুগ্ম জেলা যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-১ মাহমুদুল হাসান, কক্সবাজারের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব কুমার বিশ্বাস, জিপি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইসহাক, পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম ফরিদ, লিগ্যাল এইড কমিটির প্যানেল আইনজীবী, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানবৃন্দ, কক্সবাজারের ৩০ জন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সাংবাদিক ও বিভিন্ন পর্যায়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বিচারপতি নাঈমা হায়দার আরো বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় এখন ভার্চুয়ালী মামলা পরিচালনা করা হচ্ছে। এটা কোভিড-১৯ সময়ে প্রধানমন্ত্রী’র অসাধারণ একটি উদ্যোগ। বিচারপ্রার্থীরা যেটার সুফল ভোগ করছে। লিগ্যাল এইড কার্যক্রমও অনলাইনে করার সুবিধা রয়েছে। ই-ফাইলিং সুবিধা রয়েছে, সুনির্দিষ্ট ওয়েবসাইট এবং টোল ফ্রি কল সেন্টার রয়েছে। তিনি বলেন, লিগ্যাল এইড এর এসব বহুমুখী সুবিধার কথা তৃনমূল পর্যায়ে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে। বিভিন্ন সংকট ও সীমাবদ্ধতার মাঝেও আমাদের পথ চলতে হবে। লিগ্যাল এইড অফিসকে বিচারপ্রার্থীদের আস্থা ও নির্ভরতার প্রাণকেন্দ্রে পরিণত করতে হবে। বিচারপতি নাঈমা হায়দার আরো বলেন, বিচারপ্রার্থী একপক্ষ নারী, অপরপক্ষ পুরুষ হয়, আর সে মামলাটির বিচারক যদি নারী হয়, তাহলে পুরুষ বিচারপ্রার্থী মনে করে বিচারক নারীর পক্ষেই রায় দেবেন। আর বিচারক পুরুষ হলে নারী মনে করেন, বিচারক পুরুষের পক্ষেই বিচারের রায় দেবেন। এরকম অনেকের ভুল ধারণা রয়েছে। এ ধারণা মোটেও সঠিক নয়, এরকম সম্পূর্ণ ভুল ধারণা পাল্টাতে হবে। বিচারপতি নাঈমা হায়দার কক্সবাজার জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের কার্যক্রম ও অবকাঠামোগত সুবিধার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, সুপ্রীম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিস কক্সবাজার জেলা অফিসের পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক নয়। এজন্য তিনি কক্সবাজার জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এবং জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ সাজ্জাতুন নেছা লিপি সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, এ ধরনের মতবিনিময় সভা সরকারের লিগ্যাল এইডের উদ্দেশ্যকে গন্তব্য পৌঁছাতে সহায়ক হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © DailyAloPratidin.com